"মসজিদুল আকসা", মুসলমানদের প্রথম কিবলা

,
"মসজিদুল আকসা", মুসলমানদের প্রথম কিবলা যা ধ্বংস করার ঘৃন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে! একজন মুসলিম হিসেবে এটা নিজে জানা এবং অন্যকে জানানো আপনার জন্য জরুরী।**

মসজিদুল আকসা, মুসলমানদের প্রথম কিবলা। এটি জেরুজালেমে অবস্থিত। এই মসজিদটি মুসলমানদের অনেক আবেগের একটি বিষয়। কিন্তু এটাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা চলছে!!!

উপরের ছবিতে লক্ষ্য করুন, বাম পাশের ছবিতে দেখা যাচ্ছে "আল আকসা" মসজিদ। নিচের ছবিতে দেখুন এর কাছেই আরেকটা মসজিদ তৈরি করা হয়েছে, "আল শাখরা মসজিদ" যেটা ডান পাশের ছবিতে দেখানো হয়েছে। কিন্তু এই শাখরা মসজিদকেই আল আকসা হিসেবে পরিচিত করা হচ্ছে!!! আপনি গুগলে সার্চ দিয়ে দেখবেন আসল আল আকসা মসজিদের পাশাপাশি আল শাখরা মসজিদের ছবিও আসে। এর কারন কি?

এর কারন, ইহুদিরা নতুন প্রজন্মকে আল আকসা মসজিদ সম্পর্কে দ্বিধাবিভক্ত করতে চায়। তারা এই মসজিদ সম্পর্কে মানুষকে জানতে দিতে চায়না।

অনেকে মনে করছেন, ইহুদিরা পরিকল্পনা করেছে এক সময় তারা আসল মসজিদটিকে ধ্বংস করবে আর এটা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে তারা আল শাখরা মসজিদ কে দেখিয়ে বলবে মসজিদের কিছু করা হয়নি।

তবে, যতই পরিকল্পনা করা হোক না কেনও, আল্লাহ সকল পরিকল্পনা নষ্ট করে দিবেন। আল্লাহ তায়ালা নিজেই রক্ষা করবেন এটাকে।

মসজিদে আকসার উপর ইহুদীদের আক্রোশের বিবরণঃ
________________________________
ইসরালীদের প্রথম এবং প্রধান টার্গেট হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের মূল শক্তি তথা কেন্দ্রবিন্দু বায়তুল মোকাদ্দাস বা আল কুদ্স। ১৯৬৭ সালের জুন যুদ্ধের পরে ইসরাইলীগণ “হাইকালে সোলায়মানী' খোঁজার নাম করে ১০ পর্যায়ে খনন কার্য চালিয়েছে। এর উদ্দেশ্য একটাই, বায়তুল মোকাদ্দেসকে ধ্বংস করা। ১৯৬৭ সালে প্রথম পর্যায়ে বাবুল মাগরেবা পর্যন্ত ১৪ মিটার গভীরতায় খনন করেছে। ২য় পর্যায়ে ১৯৬৯ সালে ব্যাপকভাবে মুসলমানদের উৎখাত করা হয় এবং মসজিদুল আকসায় অগ্নি সংযোগ করা হয়। এ সময়ে মসজিদে আকসার ৮০ মিটার দূরে ব্যাপকভাবে খনন কার্য চালানো হয়। ১৯৭০ থেকে ৭২ পর্যন্ত ৩য় পর্যায়ে মসজিদে আকসার দেয়ালের নিচে দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে খনন করা হয় ইসলামী কোর্ট এবং মুসলমানদের বাড়িঘর দখল করে নেয়া হয়। ৪র্থ পর্যায়ে ১৯৭৩ সালে মসজিদের পশ্চিম দেয়ালের নিচে ১৫ মিটার গর্ত করে খনন করা হয়। ৫ম পর্যায়ে ১৯৭৪ সালে পশ্চিম দেয়ালের গর্তকে খননের মধ্যে আরো সম্প্রসারিত করা হয়। ৬ষ্ঠ পর্যায়ে ১৯৭৫-৭৬ সালে পশ্চিম দেয়ালের গর্ত আরো সম্প্রসারিত করা হয় এবং প্রখ্যাত সাহাবীদ্বয় উবাদাহ বিন সামেত এবং শাদ্দাদ বিন আউসের (রা.) কবর থেকে হাড়গোড় সরিয়ে ফেলা হয়। ৭ম পর্যায়ে আকসার আঙ্গিনায় মহিলা মসজিদের নিচ পর্যন্ত খনন করা হয়। ১৯৭৯ সালে ৮ম পর্যায়ে পশ্চিম দেয়ালের নিচেও বোরাক দেয়ালের পার্শ্বে খনন করা হয়। ইহুদীরা সুরঙ্গটি পাকা করে তাদের উপাসনালয় নির্মাণ করলে তদানিন্তন প্রসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী তা উদ্বোধন করেন। ৯ম পর্যায়ে ১৯৮৬ সালে ব্যাপক খনন কার্য চালানো হয়। এ সময় জেরুসালেম থেকে বহু মুসলিম পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। সেখানকার ফিলিস্তিনি হাসপাতালটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ১০ম পর্যায়ে ১৯৮৮ সালে মসজিদ সংলগ্ন ওয়াদী এলাকায় ব্যাপক খনন শুরু করলে মসজিদের নিরস্ত্র রক্ষীরা বাধা দেয়। বাঁধা উপেক্ষা করে ব্যাপকভাবে খনন কাজ চলে। এদের লক্ষ্য ছিল মসজিদ আকসা এবং মসজিদে সাহারার নিচের সকল মাটি ফেলে দেয়া। যাতে করে মসজিদদ্বয় সামান্য ভূকম্পন কিংবা এমনিতেই ধ্বংস হয়। মূলত খনন কাজের এটাই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। হাইকালে সোলায়মানী খোঁজাটা বাহানা মাত্র।

৬৭'র যুদ্ধ চলাকালীন ইহুদীরা মসজিদে আকসার কয়েকটি জানালা ভেঙ্গে ফেলে ক্ষতি সাধন করে। ১১ জুন তারিখ বোরাক দেয়ালের সামনের মুসলিম বসতিটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। ১৫ আগস্ট বড় হাখাস ২০ জন ইসরাইলী সামরিক অফিসারকে নিয়ে অস্ত্রসহ মসজিদে প্রবেশ করে এলাপাথারিভাবে গুলী করে এবং পরে প্রার্থনা করে। ৭০ খৃস্টাব্দের আগস্ট মাসে হাইকালে সোলায়মানী ধ্বংসের স্মৃতিতে তারা প্রতিবছর আগস্ট মাসে বায়তুল মোকাদ্দাসে আগ্রাসী তৎপরতা চালায়। ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ডেনিল মাইকেল নামক এক অস্ট্রেলিয়ান খৃস্টান মসজিদে আকসায় অগ্নি সংযোগ করে। ইসরাইলী হাইকোর্ট এ ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস দেয়। এরই প্রতিবাদে ইসলামী সম্মেলন সংস্খা গঠিত হয়।

১৯৭৬ সালের ৩০ জানুয়ারি ইসরাইলী আদালত মসজিদে আকসার আঙ্গিনায় ইহুদীদের অনুমতি দেয়। ৮০ জন ইহুদী জোর করে মসজিদে প্রবেশ করে গান গেয়ে নামাজে বাঁধা দেয়। ১৯৮০ সালের ১ মে ইহুদীরা বিস্ফোরণের মাধ্যমে মসজিদ ধ্বংস করার চেষ্টা চালায়। তারা পার্শ্ববর্তী গীর্জার ছাদে ১ টনের বেশি বিস্ফোরক দ্রব্য রেখে দেয়। মুসলমানদের সতর্কতায় তারা ব্যর্থ হয়। ১৯৮১ সালের ৯ আগস্ট ইহুদী সংস্খা ‘জোশ' ইযুনিয়ামের ৩শ' সদস্য মসজিদের তালা ভেঙ্গে প্রবশ করে এবং প্রার্থনা আদায় করে। ১৯৮২ সালের ২ মার্চ ১৫ ব্যক্তি সশস্ত্রভাবে মসজিদে ঢুকে পরে একজন রক্ষীকে ছুরিকাঘাত করে। এর প্রতিবাদে জেরুজালেম, গাজা, পশ্চিমতীর এবং নাবলুসে ধর্মঘট হয়। ৩য় মার্চ একইভাবে আরো ১ জন রক্ষীকে আহত করে। ১৯৮২ সালের ১১ এপ্রিল গডম্যান নামক ইহুদী মসজিদে এসে এলোপাথারী গুলী ছোড়ে। এতে মসজিদের ১ জন রক্ষী শহীদ হয় এবং অনেক মুসল্লী হতাহত হয়। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষায় এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে ইসরাইলী সৈন্যদের গুলীতে ১শ'র বেশি লোক আহত হয়। ১৯৮৩ সালে রাবী জালমানের শিষ্যরা মসজিদে আকসা আক্রমণ করে। একই বছর ৪২ ইহুদী মসজিদে আগুন দেয়ার চেষ্টা করলে রক্ষীরা তা প্রতিরোধ করে। ১৯৮৪ সালে সন্ত্রাসী ইহুদী ২৯ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে মসজিদটি ধ্বংস করার চেষ্টা করে মুসলমানদের সর্তকতার কারণে তা ব্যর্থ হয়। ১৯৮৪ সালে মসজিদে ইসরাইলী পতাকা উত্তোলনের দুটি চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১৯৮৬ সালে ৯ জানুয়ারি নেসেটের ৮ সদস্য মসজিদে প্রবেশ করলে রক্ষীরা বাধা দেয় এতে সংঘর্ষ বাধলে ১৬ জন মুসল্লী আহত হয়। একইভাবে ১৯৮৭ সালে ৪ঠা আগস্ট ও ৮৮ সালের ১৫ জানুয়ারি হামলা চালিয়ে ৩২ জন মুসুল্লীকে হত্যা করে এবং দুই শতাধীক মুসলিম আহত হয়। ১৯৯০ সালের ৮ অক্টোবর ইহুদীরা মুসুল্লীদের উপর নির্বিচারে গুলী চালায়। এতে ২ জন শহীদ হয় এবং ১০০ আহত হয়।

See the link below for more information
al aqsa in wikipedia http://en.wikipedia.org/wiki/Al-Aqsa_Mosque
http://en.wikipedia.org/wiki/Dome_of_the_Rock 

1 comments:

Post a Comment