Mon, 01/11/2010 - 7:33am | by abdullah.shafi
কিছুদিন আগে ছোট পর্দার জনপ্রিয় এক অভিনেত্রীর অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় তার সাবেক প্রেমিক। এ কারণে ওই অভিনেত্রীর পেশাগত জীবন ক্ষতিগ্রস্থ হয়, মানসিকভাবেও তিনি ভেঙ্গে পড়েন।এ নিয়ে মিডিয়া জগতে সমালোচনার ঝড় উঠে।
সম্প্রতি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় বখাটেদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজছাত্রীর গোসলের দৃশ্য গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করে বখাটেরা। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয় তারা। অপমানে ক্ষোভে মেধাবী ওই ছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ এলাকার অনেকে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।
নারায়ণগঞ্জের সদর থানার ভুইয়াপাড়ায় গত ১৮ অক্টোবর ঘটে যায় আরেক মর্মান্তিক ঘটনা। এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ করে স্থানীয় বখাটে রাসেল ও তার সহযোগীরা। বখাটেরা ধর্ষনের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি দেয়। সম্প্রতি এক বখাটে স্বামী যৌতুক না পেয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছাড়ার হুমকি দেয়। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকলের চেষ্টা করেন। ওই ডিজিটাল অপরাধীদের কয়েকজন ধরাও পড়েছেন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধের ঘটনা দেশের বিভিন্ন স্থানে আশংকাজনক হারে বাড়ছে।
এরকম অসংখ্য ঘটনা আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি খবরের কাগজে, কিন্তু সেসাথে এটাও ঠিক যে অনেক ঘটনাই খবরের কাগজ পর্যন্ত আসতে পারছে না। সেসব ঘটনা চরিত্রগুলির পরিণতি নিশ্চয় সুখকর না!
বিপথে চলেছে দেশের যুব সম্প্রদায়ের অনেকে। তারা এখন বেশি করে ঝুকছে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে। পরিবারে অভিভাবকের শাসন যেমন তারা তোয়াক্কা করছে না, তেমনি আইনশৃক্সখলাকেও তারা পরোয়া করছে না। যে আধুনিক প্রযুক্তি তাদের জন্য হওয়ার কথা ছিল আশির্বাদ, সেটাকেই তারা এখন অপরাধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা থেকে শুরু করে ঘরের গৃহবধুও পর্নোগ্রাফির ভয়াবহ ফাঁদ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিদেশী নয়, দেশি পর্নোছবির বাজার রমরমা। এগুলোর অনেকটাই প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি করা। সেক্ষেত্রে গোপন ভিডিও, মোবাইলের গোপন ক্যামেরা, বাংলা ছবির কাটপিস, যাত্রার যৌণ উত্তেজক দৃশ্য, মডেলিংয়ের নামে প্রতারণা এবং ফোটোশপে অন্যের মুখ ব্যবহার করে এগুলো তৈরি করা। একটি চক্র সংগ্রহ করে এগুলো পর্নো ছবি হিসেবে বাজারজাত করছে।
বাজারে এগুলো 'রিয়েল রেপ সিন' নামেও বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর অভিজাত শপিং কমপ্লেক্সের সিডি-ভিসিডির দোকানেও এগুলো পাওয়া যাচ্ছে। মূলত স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরাই এসব ছবির মূল ক্রেতা। এদের অনেকেই শপিং কমপ্লেক্সেগুলোতে এসে তাদের মোবাইলে বা পেনড্রাইভে এগুলো ডাউনলোড করে নিয়ে যায়। ঢাকার পর্নো ছবির সবচেয়ে বড় মার্কেট ইস্টার্ন প্লাজা। এখানকার ৮০-৯০টি মোবাইল ফোনের দোকানে নিয়মিত ওই ভিডিওচিত্র আপলোড করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফির কারণে অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভুক্তভোগি ছাত্রী কিংবা নারী এ ক্ষেত্রে হতাশায় ভেঙে পড়েন। অনেকে আত্মহত্যাও করেন। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক পর্নোসাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছ।
সরকারসহ সমাজের সংশ্লিষ্ট সবাইকে খুজে বের করতে হবে কারণ এবং প্রতিরোধ করতে হবে শক্ত হাতে।