Thu, 27/10/2011 - 5:11pm | by ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন
পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের নামে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা কাজ করলেও পাহাড়ের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রায় প্রত্যাশিত পরিবর্তন এখনো আসেনি।
পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে দেশী-বিদেশী বিপুল এনজিও তাদের দাতাগোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে। পাহাড়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। এ অঞ্চলের প্রতি রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও বিশেষ দৃষ্টি। পুর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানের মত একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য তারা তৎপর। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে চলছে রমরমা মহাজনী ব্যবসা।একথা দিবা লোকের মত স্পষ্ট যে, দাতাগোষ্ঠী বা সাম্রাজ্যবাদী অক্ষশক্তি বিনা স্বার্থে এক পেনিও ব্যয় করে না। কালের কন্ঠের রাঙামাটি প্রতিনিধি ফজলে এলাহী প্রেরিত প্রতিবেদনে এর বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে:
“পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজ করছে দেশি-বিদেশি অনেক উন্নয়ন সংস্থা। ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির পর এসব দাতা সংস্থা ও এনজিও পাহাড়ে নানা উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করে। সরকারের পাশাপাশি পার্বত্যবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এসব সংস্থা কাজ করলেও এখানকার সিংহভাগ জনগোষ্ঠী এখনো চরম দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। গত দেড় দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেসরকারি খাতে কত টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে সেই সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন তথ্যও নেই কারো কাছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের একটি পর্যালোচনা রিপোর্টে দেখা যায়, রাঙামাটিতে ৪৩ স্থানীয়, ১৮ জাতীয় এবং ৬টি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) কাজ করছে। এদের মধ্যে ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৬টি এনজিওর ৪৯ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে খরচ হয়েছে ৩৬ কোটি ৮৮ লক্ষ। সব এনজিও মোট উপকারভোগী দেখিয়েছে ৭ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৬০ জন। এক্ষেত্রে একই ব্যক্তি সুবিধাভোগী হিসেবে একাধিক এনজিওর তালিকায় রয়েছেন। এমন অনেক এলাকা বা গ্রাম এখনো আছে যেখানে এনজিওদের ক্ষুদ্র্ঋণ ছাড়া আর কোন কার্যক্রম পৌঁছেনি।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী এনজিও ও দাতা সংস্থার কাজে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে এনজিও সমন্বয় সভায় তিনি বলেন, 'এনজিওগুলোর কাজে অস্বচ্ছতা, গরমিল ও অস্পষ্টতা লক্ষ্যণীয়। আবার তারা সরকারের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার ব্যাপারেও
অনাগ্রহী। আশা করছি, এনজিওগুলোও তাদের স্বার্থেই আমাদের সহযোগিতা করবে।' এনজিও সংস্থার কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট নয় পাহাড়ের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষও।পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন রাঙামাটি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কামাল বলেন, 'এসব সংস্থা যদি সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য সমানভাবে কাজ করত তবে পাহাড়ের চেহারাই পাল্টে যেতো। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ
করছে না। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে পাহাড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।'
এ বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করে এনজিওসমূহের নেটওয়ার্ক সিএইচটিওন-এর সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চাকমা বলেন, 'এনজিওরা কাজ করছে বলেই এখানকার মানুষ কিছুটা হলেও সচেতন হচ্ছে, আলোচনা, সমালোচনা করতে পারছে।'
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাঙামাটি জেলা সংগঠক অলকেষ চাকমা বলেন, 'গত ৮ বছরে পাহাড়ে ইউএনডিপির অর্জন একেবারেই শূন্য। সরকার একসময় উন্নয়ন বোর্ড, জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদের মাধ্যমে যেভাবে একশ্রেণীর লুটেরা তৈরি করেছিল তেমনি পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর ইউএনডিপির মাধ্যমে আরেকটি লুটেরা সুবিধাভোগী শ্রেণী তৈরি করছে। ইউএনডিপি পাহাড়ি সমাজে বিভক্তি তৈরি করছে, শ্রেণী বৈষম্য বাড়াচ্ছে।'
এনজিও কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, 'কিছু এনজিও কিছু ভালো প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে কিন্তু সামগ্রিকভাবে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। এনজিওরা পাড়া বা গ্রামপ্রধানদের সাথে সমন্বয় করে না। এমনকি নিজেদের মধ্যেও সমন্বয় আছে বলে মনে হয় না।' রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রমোদ চাকমা বলেন, 'ইউএনডিপির কার্যক্রম আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবে হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের খুব একটা পরিবর্তন আসেনি, প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় এবং পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।'
স্থানীয় সাংবাদিক জাগরণ চাকমা বলেন, 'ইউএনডিপির বিভিন্ন প্রকল্পে পাহাড়ে বিশেষ কিছু পরিবার এবং তাদের স্বজনরা ছাড়া সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়নি। গত আট বছরে তাদের সফলতার কোন চিত্র দৃশ্যমান নয়। তাদের কারণে পাহাড়ে শ্রেণী বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।”
সূত্র : কালের কন্ঠ, ২৭.১০.২০১১
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের একটি পর্যালোচনা রিপোর্টে দেখা যায়, রাঙামাটিতে ৪৩ স্থানীয়, ১৮ জাতীয় এবং ৬টি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) কাজ করছে। এদের মধ্যে ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৬টি এনজিওর ৪৯ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দের বিপরীতে খরচ হয়েছে ৩৬ কোটি ৮৮ লক্ষ। সব এনজিও মোট উপকারভোগী দেখিয়েছে ৭ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৬০ জন। এক্ষেত্রে একই ব্যক্তি সুবিধাভোগী হিসেবে একাধিক এনজিওর তালিকায় রয়েছেন। এমন অনেক এলাকা বা গ্রাম এখনো আছে যেখানে এনজিওদের ক্ষুদ্র্ঋণ ছাড়া আর কোন কার্যক্রম পৌঁছেনি।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী এনজিও ও দাতা সংস্থার কাজে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে এনজিও সমন্বয় সভায় তিনি বলেন, 'এনজিওগুলোর কাজে অস্বচ্ছতা, গরমিল ও অস্পষ্টতা লক্ষ্যণীয়। আবার তারা সরকারের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার ব্যাপারেও
অনাগ্রহী। আশা করছি, এনজিওগুলোও তাদের স্বার্থেই আমাদের সহযোগিতা করবে।' এনজিও সংস্থার কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট নয় পাহাড়ের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষও।পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন রাঙামাটি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কামাল বলেন, 'এসব সংস্থা যদি সকল জাতিগোষ্ঠীর জন্য সমানভাবে কাজ করত তবে পাহাড়ের চেহারাই পাল্টে যেতো। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ
করছে না। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে পাহাড়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে।'
এ বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করে এনজিওসমূহের নেটওয়ার্ক সিএইচটিওন-এর সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চাকমা বলেন, 'এনজিওরা কাজ করছে বলেই এখানকার মানুষ কিছুটা হলেও সচেতন হচ্ছে, আলোচনা, সমালোচনা করতে পারছে।'
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) রাঙামাটি জেলা সংগঠক অলকেষ চাকমা বলেন, 'গত ৮ বছরে পাহাড়ে ইউএনডিপির অর্জন একেবারেই শূন্য। সরকার একসময় উন্নয়ন বোর্ড, জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদের মাধ্যমে যেভাবে একশ্রেণীর লুটেরা তৈরি করেছিল তেমনি পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর ইউএনডিপির মাধ্যমে আরেকটি লুটেরা সুবিধাভোগী শ্রেণী তৈরি করছে। ইউএনডিপি পাহাড়ি সমাজে বিভক্তি তৈরি করছে, শ্রেণী বৈষম্য বাড়াচ্ছে।'
এনজিও কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, 'কিছু এনজিও কিছু ভালো প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে কিন্তু সামগ্রিকভাবে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু পাওয়া যাচ্ছে না। এনজিওরা পাড়া বা গ্রামপ্রধানদের সাথে সমন্বয় করে না। এমনকি নিজেদের মধ্যেও সমন্বয় আছে বলে মনে হয় না।' রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রমোদ চাকমা বলেন, 'ইউএনডিপির কার্যক্রম আমরা যেভাবে চেয়েছি সেভাবে হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের খুব একটা পরিবর্তন আসেনি, প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় এবং পরিকল্পনার অভাব রয়েছে।'
স্থানীয় সাংবাদিক জাগরণ চাকমা বলেন, 'ইউএনডিপির বিভিন্ন প্রকল্পে পাহাড়ে বিশেষ কিছু পরিবার এবং তাদের স্বজনরা ছাড়া সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়নি। গত আট বছরে তাদের সফলতার কোন চিত্র দৃশ্যমান নয়। তাদের কারণে পাহাড়ে শ্রেণী বৈষম্য তৈরি হচ্ছে।”
সূত্র : কালের কন্ঠ, ২৭.১০.২০১১