পার্বত্য এলাকায় এনজিওর নামে ধর্মান্তরকরণ

,

chtMap.jpg
বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকাকে ঘিরে এনজিও এবং আন্তর্জাতিক খ্রিষ্টান লবি বিজাতীয় কৃষ্টি ও ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে দীর্ঘ দিন তৎপরতা চালিয়ে আসছে। চিকিৎসা ও সমাজসেবার আড়ালে তারা দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করার প্রয়াস পাচ্ছে। পার্বত্য এলাকায় প্রায় ৪৫টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর অধিবাস। ২০ লাখ আদিবাসী রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা, চরম দারিদ্র্য, ক্ষুধা, মহামারী, অপুষ্টি ও স্যানিটেশন সমস্যা তাদের নিত্যসঙ্গী।
বিদেশী অর্থে পরিপুষ্ট বহু এনজিও পার্বত্য জেলায় সক্রিয়। এদের বেশির ভাগই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে ধর্মান্তরিত করছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ বছরে সেখানে ১২ হাজার উপজাতীয় পরিবার খ্রিষ্টান হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলায় ১৯৪টি গির্জা এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রাখছে। খাগড়াছড়ি জেলায় ৭৩টি গির্জা। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এ জেলায় চার হাজার ৩১টি পরিবার খ্রিষ্টান হয়ে গেছে। বান্দরবান জেলায় গির্জা ১১৭টি। একই সময়ে খ্রিষ্টান হয়েছে ছয় হাজার ৪৮০টি উপজাতীয় পরিবার। রাঙ্গামাটিতে চারটি গির্জা খ্রিষ্টান বানিয়েছে এক হাজার ৬৯০টি পরিবারকে। পাহাড়ি যেসব জনগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা কম, তাদের প্রায় শতভাগ খ্রিষ্টান হয়ে গেছে অনেক আগেই।
পাহাড়িদের সংস্কৃতি অটুট রাখার জন্য কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনকারী পশ্চিমাগোষ্ঠীর মদদে ধর্মান্তরকরণে উপজাতীয়দের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ বিপন্ন। সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাচ্ছে। এভাবে স্পর্শকাতর এলাকায় ডেমোগ্রাফির নাটকীয় পরিবর্তন মেনে নেয়া যায় না। ব্রিটিশ রাজশক্তি পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছিল, যাতে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। মিশনারিরা চন্দ্রঘোনা, মালুমঘাট, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাসপাতাল ও মাতৃসদন প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন খ্রিষ্ট ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রসারের লক্ষ্যে। বাংলাদেশে কর্মতৎপর এনজিওর সংখ্যা ৩০ হাজার। বহুজাতিক কোম্পানির আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থে এবং অসহায়, নিঃস্ব, নিরক্ষর মানুষকে সেবা করার নামে ইউরোপীয় সংস্কৃতি ও খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করার তৎপরতায় বহু এনজিও জড়িত। এদের বাজেটের ৯০ শতাংশ অর্থ খ্রিষ্টানদের বা খ্রিষ্টান হওয়ার সম্ভাবনাময় ব্যক্তিদের স্বার্থে এবং নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদেশী কনসালটেন্টের পেছনে ব্যয় হয়।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাজেক ইউনিয়নটি সীমান্তবর্তী ও দুর্গম যা বাংলাদেশের কোনো কোনো জেলার সমান। নৈসর্গিক সৌন্দর্য মণ্ডিত এই উপত্যকায় পৌঁছতে খাগড়াছড়ি বা রাঙ্গামাটি শহর থেকে দু’দিন লাগে। এই ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে খেয়াং, বম, পাংখু, লুসাই উপজাতির ১০ হাজার মানুষের বাস। ২০ বছর আগেও এখানে খ্রিষ্ট ধর্মের নামগন্ধ ছিল না। উপজাতীয়দের ভাষা, সংস্কৃতি সবই ছিল। আজ কিছুই নেই। শুধু ইংরেজিতে কথা বলাই নয়; সেখানকার অধিবাসীরা গিটার বাজিয়ে ইংরেজি গান গায়; মেয়েরা পরে প্যান্ট-শার্ট স্কার্ট। তাদের দেখে মনে হয় যেন বাংলার বুকে ‘একখণ্ড ইউরোপ’। কারণ এখন তারা প্রায় সবাই খ্রিষ্টান। দীর্ঘ দিন ধরে এই এলাকায় খ্রিষ্টানেরা অনেক কৌশল ও টাকা ব্যয়ে ধর্মান্তরিত করে চলেছে। পাংখু উপজাতি পুরোপুরি খ্রিষ্টান হয়ে গেছে; বদলে গেছে তাদের ভাষা; এমনকি হরফও ইংরেজি। এনজিওর নাম ধারণ করে খ্রিষ্টানেরা এই দুর্গম এলাকায় হাসপাতাল, বিনোদন কেন্দ্র, গির্জা ইত্যাদি গড়ে তুলেছে।
বাংলাদেশের উত্তর, দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় গড়ে উঠেছে সুদৃশ্য গির্জা। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও ময়মনসিংহের অরণ্যে বসবাসরত চাকমা, মারমা, মুরুং, টিপরা, খাসিয়া, মনিপুরী, লুসাই, গারো প্রভৃতি উপজাতির মধ্যে খ্রিষ্ট সংস্কৃতি ও ধর্মের অনুপ্রবেশ জীবনধারায় এনেছে আমূল পরিবর্তন। ‘প্রতিটি মানুষের জন্য একটি বাইবেল এবং প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য একটি গির্জা’। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা লক্ষ্য পানে ছুটে চলেছে। ১৯৩৯ সালে বাংলাদেশে খ্রিষ্টান ছিল ৫০ হাজার। ১৯৯২ সালে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখে; আগামী বছর ২০১২ সালে দাঁড়াবে এক কোটিতে। এনজিও ওয়ার্ল্ড ভিশনের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে ১৯৯১ সালে একমাত্র গারো পাহাড় এলাকায় ১৬ হাজার ভোটার তালিকাভুক্ত হয় এবং খ্রিষ্টান জনশক্তি দাঁড়ায় ৫০ হাজারে।
বৃহত্তর সিলেটে ৩০ হাজার খাসিয়ার ৮০-৯০ শতাংশই খ্রিষ্টান। প্রায় প্রতিটি পুঞ্জিতে (গ্রাম) গির্জা আছে। যাজকেরা বিচার-আচারেরও দায়িত্ব পালন করেন। খ্রিষ্টান হওয়ার ফলে খাসিয়াদের আর্থসামাজিক কাঠামোই বদলে গেছে। খাসিয়া ভাষা সীমান্তের ওপারে রোমান হরফে লেখা হচ্ছে। মিশনারিদের প্রচেষ্টায় সাঁওতাল লিপির বর্ণমালাও রোমান হরফে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলের ধর্মান্তরের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। মুসলমান, হিন্দু, আর সাঁওতালদের মধ্যে খ্রিষ্টান হওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। বৃহত্তর রংপুর ও বৃহত্তর দিনাজপুরের আটটি জেলায় গজিয়ে উঠেছে গির্জা। ওই সব গির্জায় গত পাঁচ বছরে ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ খ্রিষ্টান হয়েছে। বেকারত্ব আর দারিদ্র্যকে পুঁজি করে তারা ধর্মান্তরের টোপ দিচ্ছে মানুষকে। শিশুদেরও খ্রিষ্টান করার অপতৎপরতা চালাচ্ছেন পাদ্রিরা। তারা আটটি জেলায় কমপক্ষে ৩০-৪০টি নার্সারি স্কুল খুলেছেন। ক্লাসরুমে যিশুর প্রতিকৃতিসহ খ্রিষ্টীয় সংস্কৃতির ছবি ও অনুষঙ্গ রাখা হয়। এগুলো দেখিয়ে শিশুদের খ্রিষ্টান ধর্ম ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান দেয়া হয়। আগামী ১০-১২ বছরে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে লক্ষাধিক দরিদ্র ও বেকার যুবক খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হতে পারে বলে আশঙ্কা হচ্ছে।
সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে ওরা এসে যদি আদিবাসীদের মধ্যে খ্রিষ্টান ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রচার করতে পারে, তাহলে এত কাছের হয়েও আমরা মুসলমানেরা কেন ইসলাম ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রচার না করে বসে থাকব? সাহায্যের, সহানুভূতির, সেবার হাত পাহাড়ি ভাইদের প্রতি আমরা কেন সমপ্রসারণ করতে পারলাম না? এর মাশুল এক দিন দিতেই হবে। প্রায় ২০ বছর আগে পটিয়া আল জামিআ আল ইসলামিয়ার সাবেক প্রধান পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুছ রহ: কাপ্তাইয়ের অদূরে সুখবিলাস ও বান্দরবান সদরে দু’টি ১০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক দাতব্য হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা প্রদানের সূচনা করেছিলেন। তা যথেষ্ট ফল দিয়েছে। তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে আর কেউ এগিয়ে আসেননি।
‘সেভেন সিস্টা’র নামে খ্যাত মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, হিমাচল, অরুণাচল প্রভৃতি ভারতীয় রাজ্যের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এখন ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টান। ওই সব পাহাড়ি অঞ্চলসংলগ্ন বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায়ও উল্লেখযোগ্য হারে খ্রিষ্টানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, খ্রিষ্টান অধ্যুষিত ইউরোপীয় দাতাগোষ্ঠী ও এনজিওরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে টার্গেট করে এগোচ্ছে। প্রায় দু’বছর স্থগিত থাকার পর ইউএনডিপি এই বছর রাঙ্গামাটি, বিলাইছড়ি, বান্দরবান ও থানচিতে ২০ লাখ মার্কিন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা উন্নয়নের নামে দেদার বৈদেশিক অর্থের দ্বারা নব দীক্ষিত খ্রিষ্টান জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসনের কাজে লিপ্ত। কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্লানের অধীনে তারা খ্রিষ্টান যুবকদের উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা প্রভৃতি দেশে প্রেরণ করে থাকে। এভাবে পার্বত্য অঞ্চলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সচ্ছল এবং রাজনৈতিক দিক দিয়ে বিপজ্জনক একটি জনগোষ্ঠী গড়ে উঠবে। সীমান্তের দুই পাশে এভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের আশঙ্কা অমূলক নয়। এনজিওরা দাতাগোষ্ঠীর গোপন পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন করে থাকে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় বহুদিন ধরে এনজিওরা আদিবাসীদের ধর্মান্তরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সুকৌশলে। ৮১৮টি এনজিওকে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ‘কালো তালিকা’ভুক্ত করে রাজ্যগুলোর জেলা প্রশাসককে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এই এনজিওদের মধ্যে ত্রিপুরার ৬৯, মনিপুরের ১৯৭, আসামের ১৫১, নাগাল্যান্ডের ৭৮ ও মেঘালয়ের ৩২৩টি।
এবার খ্রিষ্টান অধ্যুষিত দক্ষিণ সুদান স্বীকৃতি পেয়েছে পূর্ব তিমুরের পথ ধরে। কারণ জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে রয়েছে ওদের ‘স্ট্রং লবি’। ২০০২ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক মুরব্বিদের সহায়তায় ইন্দোনেশিয়ার ২৭তম প্রদেশ পূর্ব তিমুর স্বাধীনতা লাভ করেছে। কিন্তু কাশ্মির, মিন্দানাও, আরাকান, আচেহ, চেচনিয়া, দাঘেস্তান, ফিলিস্তিন ও জিনজিয়াং অঞ্চলের মুক্তিকামী জনতা আদৌ জাতিসঙ্ঘের অধীনে স্বাধীনতা পাবে কি না, সন্দেহ। কারণ এসব এলাকা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ।
১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিয়া কোম্পানির বোর্ড অব ডিরেক্টর্স -এর সভায় গৃহীত প্রস্তাব ওদের উদ্দেশ্য বুঝতে সহায়ক : ‘প্রকৃতি ভারতীয় উপমহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলটি এ জন্য ব্রিটেনের কাছে সোপর্দ করেছে, যাতে এতদঞ্চলের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত আমাদের বিজয় পতাকা উড্ডীন হয়। এতদঞ্চলকে খ্রিষ্টান রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য প্রত্যেকের আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত।’ (দৈনিক আজাদ, ঢাকা, ৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৭৪ বাংলা)।
মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে মিশনারি প্রেরক সমিতির সভাপতি কিস জুয়াইমর বলেন, ‘খ্রিষ্টানদের বড় উদ্দেশ্য হলো, যেসব ছাত্র আমাদের স্কুল-কলেজ থেকে শিক্ষা সমাপন করে বের হচ্ছে, তারা নিশ্চিতরূপে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া, যদিও তা আনুষ্ঠানিক নয়। অর্থাৎ নাম ও পরিচিতিতে খ্রিষ্টান না হলেও মনমেজাজ, ধ্যানধারণা ও চিন্তাচেতনায় সে ইসলামবিমুখ। এবং সে সম্পূর্ণ অজ্ঞাতে আমাদের মিশনের একজন বড় পৃষ্ঠপোষক। তার পক্ষ থেকে আমাদের অনিষ্টের কোনো আশঙ্কা নেই। সে আমাদের ও মিশনের বিরুদ্ধেও টুঁ শব্দটিও করতে পারে না। এটা আমাদের সে সফলতা, দুনিয়ায় যার নজির নেই’ (মাসিক বাইয়েনাত, করাচি, শাবান-১৩৮৬ হিজরি)।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ষড়যন্ত্র ও আগ্রাসন চালিয়ে যে দেশ দখল করে, সেখানেই রাষ্ট্রীয় ছত্রছায়ায় যাজকদের খ্রিষ্টধর্ম ও সংস্কৃতি প্রচারের ব্যাপক সুযোগ করে দেয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকের আর্থ-রাজনৈতিক পুনর্গঠনের আড়ালে খ্রিষ্টধর্ম বিকাশে বাইবেল প্রচারকদের অগ্রণী ভূমিকা এরই বহিঃপ্রকাশ। সমপ্রতি কানাডার বৃহত্তম সংবাদপত্র টরোন্টো স্টার ‘মার্কিন বাইবেল প্রচারকেরা ইরাকের জন্য সুবৃহৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে’ শিরোনামে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, ‘সাদার্ন ব্যাপটিস্ট কনভেনশনের প্রেসিডেন্ট চার্লস স্ট্যানলি যুদ্ধবিধ্বস্ত ও স্বজনহারা ইরাকি জনগণকে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগে রিলিফ সরবরাহের পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করার মহাপরিকল্পনায় হাত দিয়েছেন।’
এনজিও ও মিশনারিরা ৯০ শতাংশ মুসলমানের বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের মতো সঙ্ঘাতমুখী যে পরিসি'তি সৃষ্টি করতে যাচ্ছে, তাতে নীরব বসে থাকা যায় না। একটি স্বাধীন দেশের জন্য এমন পরিস্থিতি ভয়াবহ। বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক অনিবন্ধিত এনজিও ২০০১ সালে অবৈধভাবে বিদেশ থেকে ৫৫ কোটি টাকা এনেছে এবং আশ্চর্যের বিষয়, দেশী-বিদেশী ব্যাংকের মাধ্যমে পুরো অর্থ ছাড় করে নিয়ে গেছে। আমরা এনজিওদের দেশীয় সংস্কৃতি ও আদর্শবহির্ভূত সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবি জানাই। নব্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এনজিওদের কর্মকাণ্ড ঘনিষ্ঠভাবে মনিটরিং করা সময়ের অপরিহার্য দাবি। এই প্রেক্ষাপটে মুসলমানের ত্যাগ ও সেবার মানসিকতা নিয়ে বাস্তব কর্মসূচি হাতে নিতে হবে, যাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং নিজেদের ঐতিহ্য ও কৃষ্টি রক্ষা করা যায়।
রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, আলেমসহ সর্বস্তরের মুসলমানদের এ বিষয়ে সুচিন্তিত কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজ রাজত্বে মিশনারিদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে মাওলানা রহমাতুল্লাহ কিয়ানবী রহ:, হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কি রহ:, পণ্ডিত রিয়াজুদ্দীন মাশহাদী রহ:, মুনশি মেহেরুল্লাহ প্রমুখ যেভাবে বক্তৃতা, লেখনী ও কর্মকৌশলের মাধ্যমে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন, তা এখনো আমাদের জন্য প্রেরণার উৎস।

Partner site : online news / celebrities /  celebrity image
website design by Web School.

0 comments to “পার্বত্য এলাকায় এনজিওর নামে ধর্মান্তরকরণ”

Post a Comment