সমকামিতা ও এইডসের আন্তঃসম্পর্ক এবং একটি গ্রন্থ সমালোচনা

,

আমাদের দেশের জনগণের একটি মজ্জাগত বৈশিষ্ট্য হলো, তারা ডাক্তারের কাছে সহজে যেতে চায়না, নিজেই নিজের চিকিৎসা করে, আমাদের অভিজিৎ বাবুও চিকিৎসক না হয়েই এইডসের মত একটি মরনঘাতী ব্যাধিতে সমকামের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রচার করে সমাজের উপর তার অপচিকিৎসা চালিয়ে যান । আমার বাবা ইতিহাসের লোক, চিকিৎসক নন, আমার মাতামহ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লোক – ১৯৫২ সালের ভাষা সৈনিক তথা একাত্তরের বুদ্ধিজীবী মুহাম্মদ জিয়াদ আলী, তিনিও চিকিৎসাবিদ্যার সঙ্গে জড়িত নন । তাদের মাঝে মাঝে দেখি ড্রাগ ম্যানুয়াল বা মিমস, সিমস, পিমস ইত্যাদি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে, হয়তো কারো কোন ছোটখাটো শারীরিক সমস্যা হয়েছে, তখন তারা মিমস লব্ধ জ্ঞানে রোগীকে বলেন প্যারাসিটামল বা অ্যান্টি অ্যালারজিক খেতে । এই কাজটি বাংলাদেশে অনেকেই করেন, একটু কাশি হলেই দেখা যায়, কফ সিরাপ তুসকা খাওয়া শুরু করেন । ভাইরাল কমন কোল্ডে অনেকে অনেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন । কেউবা ঘন সর্দিতে আন্দাজে অ্যালাট্রল খাওয়া শুরু করেন । আমি মনে মনে হাসি, কেননা চিকিৎসক হতে গেলে ৫ বছর এমবিবিএস পড়তে হয়, তারপর তিনি ডাক্তারি করতে পারেন, শুধু ইন্ডিকেশন- ডোজ-সাইড এফেক্ট-প্রিকোশন দেখে ঔষধ দেওয়া যায়না ।
অজয় রায় পুত্র অভিজিৎ রায় সমকাম এবং সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে একটি বিজ্ঞানময় কিতাব (!) লিখেছেন বলে দাবী করে আসছেন । এই মহাকিতাবের নাম – ““সমকামিতা : একটি বৈজ্ঞানিক এবং সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধান” , সমকামিতার পক্ষ নিতে যেয়ে অজস্র মিথ্যে বলেছেন অভিজিৎ রায়, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের দাবী করে বইটির মধ্যে জুড়ে দিয়েছেন চরম অবৈজ্ঞানিক তথ্য যা অধুনা চিকিৎসাবিজ্ঞান সমর্থন করেনা ।
দেখা যাক, অভিজিৎ রায়ের বইটির ১০ম অধ্যায়ের “সমকামিতা এবং এইডস” শীর্ষক অংশটি ।




পূর্নাঙ্গ অধ্যায়টি পেতে ডাউনলোড করুনঃ
অভিজিৎ রায় বলতে চেয়েছেন –
১) অনেকেই ভুলভাবে মনে করেন, সমকামিতার মত বিকৃত যৌনতার কারণেই বোধ হয় এইডস হয়ে থাকে । সমকামিতার কারণে কারো দেহে এইডসের জীবাণু গজায় না । বাহকের দেহে এইচআইভির জীবাণু থাকলে সমকামী যৌনসংসর্গে রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ঠিক ততটুকুই যা বিষমকামী যৌনসংসর্গেও ঘটতে পারে । এইডস সমকামিতা-বিষমকামিতায় বাছবিচার করেনা, যৌনসঙ্গীর দেহে এইচআইভি জীবাণু থাকলে এইডস হবে, নচেৎ হবেনা ।
২) আমেরিকার সমকামীদের মধ্যে এইডস রোগের হার বেশির পেছনে সমকামিতা অতটা দায়ী নয়, বরং আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটই বেশি দায়ী । আফ্রিকা মহাদেশে এইডসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি এবং সেখানে সমকামী নয় বরং বিষমকামী ব্যক্তিদের এইডস সংক্রমণ অনেক বেশি । শুধু আফ্রিকা নয়, সারা বিশ্ব জুড়েই বিষমকামীদের মধ্যে এইডসের প্রকোপ সমকামীদের থেকে অনেক বেশি দেখা যায় ।
৩) এইডসকে সমকামিতার সঙ্গে ট্যাগ করে দেওয়ার একটি ইতিহাস আছে, আমেরিকার সমকামীদের মধ্যে এই রোগের হার বেশি লক্ষ্য করে বিশেষজ্ঞরা ধরে নিয়েছিলেন এটা বোধহয় “সমকামিতা সংক্রান্ত” কোন রোগ হবে, সেখান থেকে এই ভুল ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে ।
৪) এরিখ মার্কোসের বইয়ের একটি লাইন তুলে দিয়েছেন –
Worldwide, the majority of people who have contracted HIV have been – and are – heterosexual. HIV/AIDS does not discriminate. It’s an equal opportunity disease that infects people who fail to use the well-understood methods to prevent its spread.
আমার বক্তব্য
চিকিৎসক না হয়ে শুধু সাইট ঘেটে চিকিৎসক হওয়া যায়না, যন্ত্রকৌশল প্রকৌশলী অভিজিৎ বাবু । ৫ বছর ধরে এমবিবিএস পড়তে হয়, তারপর একজন চিকিৎসক হয় । আপনি ভেবেছেন, এইডস আক্রান্ত পুরুষের লিঙ্গ নারীর যোনীতে প্রবেশ করলেই নারীর এইডস হয়ে যাবে, যা সত্য নয় । শুধু আপনি নন, আমাদের দেশের আস্তিক নাস্তিক অজস্র ব্যক্তির এই ধারণাটি রয়েছে যে একবার প্রবেশ করলেই এইডস হয়ে গেল – যা একেবারেই ভুল । সঠিক তাহলে কি ? আসুন জেনে নেই, কেন সমকামীদের মধ্যে এইডস প্রবণতা বেশি –
১) নারীর যোনীগাত্র ৩টি পুরু লেয়ারের সমন্বয়ে গঠিত এবং তাই, এটি অনেক শক্ত এবং স্থিতিস্থাপক বিধায় যৌনসঙ্গমের সময় যোনীগাত্রের চামড়াতে যে ইনজুরি হবেই, এমনটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়না । উল্লেখ্য, ইনজুরি হলেই শুধুমাত্র এইডস হবে, কিন্তু ইনজুরি না হলে এইডসের জীবাণু ব্লাড স্ট্রিমে প্রবেশ করতে পারবেনা, অর্থাৎ এইডস হবেনা । দেখা যাচ্ছে যে, পুরুষ সঙ্গীর এইডস থাকলেও তার জীবাণু নারীর ৩ লেয়ার বিশিষ্ট পুরু ও শক্ত যোনীগাত্রের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ইনজুরির স্বীকার না হয়ে রক্তপ্রবাহে মিশতে পারেনা, ফলে এইডস হয়না । কিন্তু মলাশয়গাত্র অনেক নরম এবং অস্থিতিস্থাপক, তাই লিঙ্গের ঘর্ষণে এটিতে সহজেই ইনজুরি হয়, রক্তপাত ঘটে। পেনেট্রিটিভ অ্যানাল সেক্সের কারণে মলদ্বারের চারপাশের মেমব্রেন (ঝিল্লী) সহজেই ছিড়ে যায় এবং বীর্যরসে থাকা এইডসের জীবাণু ছিড়ে যাওয়া মেমব্রেন থেকে ব্লাড স্ট্রিমে প্রবেশ করে। এজন্যেই বিষমকামী যৌনসঙ্গমে এইডস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম এবং সমকামী যৌনসঙ্গমে অনেক বেশি।
২) লিঙ্গের জন্য যোনী, লিঙ্গের জন্য মলাশয় নয় । যোনী যৌনসঙ্গমের জন্য স্পেশালি তৈরি, একটি লিঙ্গ সহজেই রক্তপাত না ঘটিয়ে নারীযোনীতে ঢুকে যেতে পারে কিন্তু একটি লিঙ্গ মলাশয়ে সহজেই ঢুকে যেতে পারেনা, তাকে প্রেশার দিয়ে ঢোকাতে হয় এবং ঢোকাতে যেয়ে প্রায়শই রক্তপাত হয় যেখান থেকে এইডসের জীবাণু এইচআইভি রক্তপ্রবাহে চলে আসে ।
৩) যৌনসঙ্গমের সময় যোনী বেশ পরিমাণে লুব্রিক্যান্ট পদার্থ নিঃসরিত করে, কিন্তু মলাশয় থেকে এরকমের কোন লুব্রিক্যান্ট পদার্থ নিঃসরিত হয়না । তাই যৌনসঙ্গমে যোনীর সচারাচর ইনজুরি না হলেও মলাশয়ের অতিসহজেই ইনজুরি হয় যার থেকে এইডসের জীবাণু এইচআইভি অতিসহজে ব্লাড স্ট্রিমে প্রবেশ করে ।
৪) মলাশয়ের লেয়ার না থাকার কারণে ব্লাড ভেসেলগুলো একেবারে মলাশয়ের গাত্রের নিকটে অবস্থান করে, যোনীর বেশ কটি লেয়ার থাকার কারণে ব্লাড ভেসেলগুলো একেবারেই সম্মুখে থাকেনা, তাই এইচ আইভি জীবাণু মলাশয়ের মাধ্যমেই বেশি সংক্রমিত হয় ।
৫) মলাশয়ের ছিদ্রের অভ্যন্তরে জায়গা অপ্রশস্ত এবং তাই যৌনসঙ্গমের সময় মলাশয়গাত্রের সাথে লিঙ্গের ঘর্ষণের মাত্রাও বেশি, ফলে মলাশয় গাত্রের ইনজুরি হওয়াটা একেবারেই সহজ, কিন্তু যোনীছিদ্রের অভ্যন্তরে জায়গার পরিমান বেশি, তাই যোনীগাত্রে সেরূপে ঘর্ষণ হয়না এবং তাই ইনজুরিও অস্বাভাবিক ।
৬) বাচ্চাকাচ্চা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই ভয়ে না চাইলেও বাধ্য হয়ে বিষমকামিগণ কনডম ব্যবহার করেন, কিন্তু সমকামীদের ক্ষেত্রে বাচ্চাকাচ্চা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে যৌনানন্দ পরিপূর্ণভাবে পেতে তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কনডম ব্যবহার করেননা ।
৭) জন্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা বিশ্বে (Coitus Interruptus) নামক যৌনসঙ্গম মেথডটি প্রচলিত যেখানে বীর্যস্খলনের আগেই লিঙ্গকে নারীর যোনী থেকে পুল-আউট করা হয়, যাতে করে নারীর যোনী এবং ইউটেরাসে বীর্যরস গমন করে তাকে গর্ভবতী করে ফেলতে না পারে । এইচআইভি জীবাণু রয়েছে – এমন বীর্যরস যদি নারীর যোনী এবং যোনী অভ্যন্তরে না যেতে পারে, তাহলে এইডসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই ।
বাংলাভাষায় এর চেয়েও সহজ করে কখনো সমকামিতার সঙ্গে এইডসের সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়নি । যোনীতে লিঙ্গ প্রবেশের মাধ্যমেই যে এইডস হবে এই ভ্রান্ত ধারণাটি আমাদের দেশের অনেকের মধ্যেই বিরাজমান ছিলো, আমার এই আর্টিকেলটি সেই ভ্রান্ত বিশ্বাসের মূলে চরম আঘাত হানলো । এখানেই ডঃ অভিজিৎ রায়ের সঙ্গে ডঃ মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরীর পার্থক্য ,অভিজিৎ রায়ের জ্ঞানের পরিধি শুধু সারফেস (Surface) পর্যন্তই সীমাবদ্ধ কিন্তু ডঃ মুশফিকের মত কোর (Core) পর্যন্ত সুবিস্তৃত নয় তাই মূর্খের মত অবিজ্ঞানময় প্রলাপ বকা অভিজিৎ রায়ের পক্ষেই সম্ভব, আমার পক্ষে সম্ভব নয় ।
শ্রী অভিজিৎ রায়ের আরো সূক্ষ্ম চালাকি দেখুন – তিনি দাবী করেছেন, আফ্রিকাসহ সারা বিশ্বে বিষমকামীদের মধ্যে এইডস বেশি । আসলেই বেশি, আমি একেবারেই অস্বীকার করিনা, কিন্তু আপনার কথার খুঁত বা চালাকিটা কোথায়, সেটি পাঠককে ধরিয়ে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছিনা । সূক্ষ্ম চালাকিটি হলো –
পৃথিবীর জনসংখ্যার মাত্র ১০% সমকামী, অর্থাৎ বিশাল ৯০% বিষমকামী ( অ্যাপ্রক্সিমেট হিসাব, এর চেয়ে কমও হতে পারে ।
দেখুনঃ Homosexuals Admit 10% Is Wrong
আমেরিকার জনসংখ্যারও মাত্র ৩.৫% সমকামী, অর্থাৎ বাকি ৯৬..৫% বিষমকামী ।
সূত্রঃ http://www2.law.ucla.edu/williamsinstitute/pdf/How-many-people-are-LGBT-Final.pdf Gates, Gary J. (April 2011) Williams Institute, University of California School of Law. Retrieved 2011-04-07.
৯০% একটি বিশাল পারসেন্টেজ, তাতে তো এইডসে আক্রান্ত বিষমকামীর সংখ্যা মোটের ওপর বেশি হবেই, এটা তো কমন সেন্সের ব্যাপার, কিন্তু এইডস আক্রান্ত মোট জনসংখ্যার ৫৪% যদি সমকামী হয় (অর্থাৎ, ৪৬% এইডস আক্রান্ত বিষমকামী) , তাহলে সেটি কি তুলনামূলক অনুপাতে বিষমকামীদের থেকেও বিশাল পারসেন্টেজ নয় ?
সূত্রঃ As of 1998, 54 percent of all AIDS cases in America were homosexual men and according to the Center for Disease Control (CDC) nearly 90 percent of these men acquired HIV through sexual activity with other men.
(Centers for Disease Control and Prevention, 1998, June, HIV/AIDS Surveillance Report 10 (1)).
কয়েকটি দেশের উদাহরণ দেই -
২০১০ সালের বিবিসি রিপোর্ট অনুসারে যুক্তরাজ্যের মাত্র ১% জনসংখ্যা সমকামী, ৯৯% বিষমকামী ।
সূত্রঃ http://www.bbc.co.uk/news/uk-11398629
২০০৬ সালের রিপোর্ট অনুসারে অস্ট্রেলিয়ার মাত্র ২-৩% জনসংখ্যা সমকামী, অর্থাৎ বিশাল ৯৭-৯৮% বিষমকামী । এতে তো মোটের উপরে এইডস আক্রান্ত রোগীর বিচারে বিষমকামীদের সংখ্যাই বেশি হবে !
২০০৩ সালের রিপোর্ট অনুসারে কানাডার মাত্র ১.৩% জনসংখ্যা সমকামী, অর্থাৎ ৯৮.৭% জনসংখ্যা বিষমকামী !
সূত্রঃ King et al. (1988). Canada, Youth and AIDS Study. Kingston, ON: Queen’s University
১৯৯২ সালের র্যান্ডম সার্ভে অনুসারে ১৩৭৩ জনের মধ্যে ডেনমার্কে মাত্র ২.৭% সমকামী ।
সূত্রঃ Sundet, J.M., et al. Prevalence of risk-prone sexual behaviour in the general population of Norway. In: Global Impact of AIDS, edited by Alan F. Fleming et al. (New York: Alan R. Liss, 1988), 53–60
২০০৩ সালের ডিউরেক্স গ্লোবাল সেক্স সার্ভে অনুসারে ১২% নরওয়েজিয়ান সমকামী ।
২০০৯ সালে সাও পাওলো ইউনিভার্সিটির সার্ভে অনুসারে ৭.৮ % জনসংখ্যা সমকামী অর্থাৎ ৯২.২% বিষমকামী ।
উল্লেখ্য, সমকামের মারাত্মক কুফলের কথা চিন্তা করে এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির কারণে সমকাম থেকে অনেকে তাদের ইচ্ছাশক্তির জোরে বের হয়ে আসতে পেরেছে, জনসংখ্যায় তাদের ক্রমহ্রাসমান পারসেন্টেজ এই কথাটিকে প্রমাণ করে । আর অনেকে মেন্টাল ও বিহ্যাভেরিয়াল কাউন্সেলিং ও মডিফিকেশনের মাধ্যমে এই দশা থেকে মুক্ত হয়েছে ।
সমকামী জনসংখ্যার এত কম পারসেন্টেজে তো মোটের ওপর কম জনসংখ্যাই এইডস আক্রান্ত হবে, কিন্তু রেশিও বা আনুপাতিক বিচারে সমকামীদের মধ্যে এইডস হওয়ার প্রবণতা কি বিষমকামীদের থেকে অনেকগুণ বেশি নয় ?
বাকি থাকলো এরিক মার্কাস প্রসঙ্গ ( অভিজিৎবাবু নাম ভুল লিখেছেন, এটা মার্কাস, মার্কোস নয় ) । অভিজিৎ বাবু ভেবেছেন – মানুষ অত খেয়াল করেনা, তারা নিশ্চয়ই তথ্যসূত্র বা কে বিশিষ্ট কে বিশিষ্ট নয় তা এত যাচাই করে দেখবে না। তাই, যার তার নাম উল্টোপাল্টা তুলে দিলেই কেল্লাফতে হয়ে যাবে !
কিন্তু ডঃ মুশফিকের ঈগলদৃষ্টি এড়ানো সম্ভব নয় । এরিক মার্কাস কোন বিখ্যাত কেউ নয় । তার সম্পর্কে আসুন একটু উইকিপিডিয়া ঘুরে দেখি –
Eric Marcus is an American non-fiction writer. His works are primarily of LGBT interest
উইকিপিডিয়াতে তার সম্পর্কে কয়েক লাইন মাত্র লেখা রয়েছে, কেননা বিখ্যাত ব্যক্তি তিনি নন, সাধারণ লেখক যিনি সমকামী সাহিত্য নিয়ে আগ্রহী আর সমকামী সাহিত্যের প্রতি অগাধ আগ্রহী অভিজিৎ রায় তাকে মহান গুরু বা বিশিষ্ট কেউ ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন ! প্রশ্ন হলো – সমকামী সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক কাদের ? সমকামীদের নাকি বিষমকামীদের ? সেই বিচারে অভিজিৎ রায়ের এরিক মার্কাসপ্রীতি কি তার ব্যক্তিগত জীবনে সমকামের প্রতি আগ্রহ থেকেই উদ্ভূত নয় ?
এবার ? এবার কোথায় পালাবেন অভিজিৎবাবু ? যেই অকাট্য যুক্তিগুলো দেওয়া হয়েছে, তাকে খণ্ডন করার সাধ্য অভিজিৎবাবুর আছে ? আর যেভাবে তিনি অন্ধের মত এবং যুক্তিরহিত – বিজ্ঞানরহিতভাবে বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে, সাধারণ লোককে বিশিষ্ট লোক বানিয়ে এভাবে সেভাবে গোঁজামিলে সমকামকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়াসী হয়েছেন, তাতে অনুমান নয়, বরং সুস্পষ্টভাবেই তার যৌনমনস্তত্ত্ব নিয়ে ধারণা পাওয়া যায় ।
তিনি নিজেকে খুব বড় মানবতাবাদী বলে প্রচার করতে চান, সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে নিজেকে প্রচার করতে চান, সমকামকে কোন নোংরা বা খারাপ কিছু বলে মনে করেন না, কিন্তু বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ ক্লু –র বিচারে তার প্রতি সমকামী বলে সন্দেহের তীর ছোড়া হলে চরম বিব্রত ও অসহায়বোধ করে নিজেকে ডিফেন্ড করতে প্রয়াসী হন, যেমনটি করতেন সমকামী অস্কার ওয়াইল্ড বা এডিংটন সিমন্ডস যারা সমকামী হয়েও নিজেদের সমকামকে জনগণের কাছ থেকে লুক্কায়িত করে রাখতে সচেষ্ট থাকতেন । সমকামিতা যে অভিজিৎ বাবু এবং তার শিস্যদের কাছেও বিব্রতকর ব্যাপার তার প্রমাণ তাদের রিয়্যাকশন বা প্রতিক্রিয়াশীলতা । সমকামী বলে প্রচারিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে তিনি ব্লগে ব্লগে অনুনয় বিনয় করে বেড়িয়েছেন, ভাবতেই চরম হাস্যকর লাগে ।
যাই হোক, সমকামিতা যে এইডস হওয়ার পেছনে একটি প্রিন্সিপ্যাল ফ্যাক্টর এখান থেকেই সুপ্রমাণিত অর্থাৎ সমকামিতা ন্যাচারাল হোক আর মানবিক অধিকার হোক, যাই-ই হোক না কেন, সমকামিতা সুস্পষ্টভাবেই স্বাস্থ্যগত ক্ষতির কারণ এবং তাই বর্জনীয় ।
অবশেষে অভিজিৎ রায় ভূপাতিত এবং ডঃ মুশফিকের ক্লিন ভিক্টরি, তাই নয় কি ? ?

Partner site : online news / celebritiescelebrity image
website design by Web School.

0 comments to “সমকামিতা ও এইডসের আন্তঃসম্পর্ক এবং একটি গ্রন্থ সমালোচনা”

Post a Comment